ঢাকা , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
মদনে নিজ উপজেলা সংবর্ধনা সিক্ত হয়েছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের নাশকতা রুখতে মাঠে ছাত্রশিবির টেকনাফের সেন্টমার্টিনে কোস্ট গার্ডের অভিযানে মায়ানমারগামী বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও নির্মাণ সামগ্রীসহ ২২ জন পাচারকারী আটক। জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন বিষয়ে জাতির উদ্দেশে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ টেকনাফে ৯ হাজার ৮০০পিস ই’য়া’বা’সহ কোস্ট গার্ডের অভিযানে এক যুবক আটক। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ দেশে ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন আর নিরপেক্ষ নেই: তাহের বড়াইগ্রামে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি, থানায় অভিযোগ চিতলমারীতে বিএনপি কর্মী রসুল শেখ কে কুপিয়ে জখম করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী দিরাই-শাল্লায় আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদের পক্ষে বিএনপির গণমিছিল ও সমাবেশ

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন…

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

মদনে নিজ উপজেলা সংবর্ধনা সিক্ত হয়েছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন…

আপডেট টাইমঃ ০২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।