
শহীদুল ইসলাম শাহেদ, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবি গত ১ ও ২ নভেম্বর পৃথক তিনটি অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও চোলাই মদ উদ্ধারসহ মানব পাচারকারী চক্রের কবল থেকে ১৩ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে।
জানা যায়, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন হাবিবছড়া ও মিঠাপানিছড়া এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে গত ১ নভেম্বর রাত ৮ টায় একটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অধিনায়কের পরিকল্পনা মাফিক ২ বিজিবির কয়েকটি চৌকস দল ইউনিট সদর হতে প্রায় ১০ কিঃ মিঃ উত্তর-পূর্ব দিকে পাহাড়ের সন্নিকটে অপরাধীদের গোপন একটি আস্তানা দ্রুত চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা রাতের অন্ধকারে পালিয়ে গেলে ধানক্ষেতের ভিতর থেকে ১৩ জন ভুক্তভোগীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায় যে, কর্মসংস্থান, ভালো বেতন, উন্নত ভবিষ্যৎ এবং অর্থের প্রলোভনের ফাঁদে আটকে চক্রটি তাদেরকে সাগরপথে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ২ বিজিবির অভিযানে প্রতারিত মানুষগুলোর এই বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত সমুদ্রযাত্রা নস্যাৎ হয়। উদ্ধারকৃত ১৩ জন ভুক্তভোগীকে নিকটাত্মীয়দের কাছে পৌঁছে দিতে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে ০২ নভেম্বর নাজির পাড়া বিওপি’র সীমান্তবর্তী গফুর মেম্বারের ঘের এলাকায় অধিনায়কের পরিকল্পনা ও দিক-নির্দেশনায় বিজিবি সদস্যরা কৌশলে ফাঁদ পাতে। আনুমানিক সন্ধ্যা ০৬ ঘটিকায় অভিযান দলের সদস্যরা সীমান্তে ৩/৪ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির গতিবিধি দেখতে পায়। এ সময় চোরাকারবারীদের ধরতে বিজিবি ধাওয়া করলে গ্রেফতার এড়াতে তাদের সাথে থাকা মাদকের বস্তা পানিতে ফেলে নিকটবর্তী খালে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে গেলে পরে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এ সময় ৬০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।পাচারকারীদের ধরতে ২ বিজিবির অভিযান চলবে।
একইদিন আরেকটি অভিযানে যাত্রীর বেশে মাদক পরিবহনের সময় ২ বিজিবির একটি চৌকস আভিযানিক দলের যানবাহন তল্লাশীকালে যাত্রীবেশে অটোরিক্সায় মাদক পরিবহনের দায়ে দুইজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের পায়ের মাঝে কৌশলে লুকিয়ে রাখা বস্তার ভিতর থেকে ৩৪ লিটার দেশীয় চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা রুজু করে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যসহ স্থানীয় থানায় সোপর্দ ও আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
আটককৃত আসামি মোঃ আব্দুল্লাহ (৩৫), পিতা-আঃ সালাম, গ্রাম-বানিয়া পাড়া, পোস্ট-জাহাজপুরা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার। মোঃ জয়নাল (২০), পিতা-মোঃ হামিদ হোসেন, গ্রাম-শ্যামলাপুর, পোস্ট-জাহাজপুরা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার। এ সময় দেশীয় চোলাই মদ- ৩৪ লিটার ও ২টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান পিএসসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষায় আমরা সংকল্পবদ্ধ ও সদা প্রস্তুত। দেশের নিরাপত্তা এবং জনপদের সুরক্ষার প্রশ্নে কোন আপস নয়। সীমান্ত ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানব ও মাদক পাচার সহ সকল প্রকার অপরাধ প্রতিরোধে বিজিবি’র বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অনলাইন ডেস্কঃ 

















