প্রতিটা মানুষের এটা জানা উচিত, দেহতত্ত্ব ও আত্মতত্ত্বে জাত-বিজাতের নিগুঢ় রহস্যের সন্ধ্যানেঃ-পবিত্র আল কোরানে আল্লাহ বলেন,যারা তাঁর নির্দেশিত পথে চলবে তাদের তিনি বেহেস্ত দিবেন। পক্ষান্তরে যারা তাঁর নির্দেশিত পথে চলবে না,তাদের তিনি জাহান্নামে দিবেন।আর কেবলমাত্র জ্বীন,ইনছান ও পাথর এই শাস্তির আওতায় আসিবে। জ্বীন ও ইনছানের কর্মগুণের হিসাবের বিচার হবে।আর এই কর্ম জীবিকা নির্বাহের কর্ম নয়,বরং তাকাওয়ার কর্ম। আর জ্বীন ও ইনছানের মধ্যে যে, আমি কিংবা আমরা নামক যে নফছো রয়েছে তার হিসেব হবে । আমি কিংবা আমরা কে? আমি মন্ত্রী,আমি অফিসার,আমি নেতা,আমি সুইপার,আমি মেথর,সর্বক্ষেত্রে আমি আর আমি। আমিই সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান।আর আমি আসলাম যেখান থেকে সেখানকার কথা কি কখনও মনে পড়ে।আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের চাকর।আর আল্লাহ যা চাইবেন ,তাই তিনি চাকরকে দিয়ে করাবেন।আমরা সকলেই চাকর।এক চাকর আরেক চাকরকে ঘৃর্ণা কিংবা অহংকার করে কেন? আর এই অহমবোধ আসে কোথা থেকে। পবিত্র কোরান থেকে জানা যায় যে,শয়তানের মধ্যে অহমবোধ থাকার কারণে আদমকে সেজদা করে নাই। আর শয়তানের মধ্যে যেহেতু নফছো আছে সেহেতু নফছোর আমিত্বই জ্ঞানী আজাজিলকে মুহুর্তের মধ্যে অহংকারী করেছিল।আর এই কারণেই নফছো শয়তানের রঙে আজাজিল রঞ্জিত হয়ে শয়তানের রূপ ধারণ করে।সুতরাং পরিপূর্ণ খান্নাছ রূপকে বর্জন করিলেই আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হওয়া যাবে।যাহার মধ্যে এক তিল পরিমাণ খান্নাছের রং থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে,আমি নফছোরূপ আত্মা দেহঘরে বাস করে নিজের মল নিজ হাত দিয়ে পরিষ্কার করে মেথরের কাজ করি কিনা।আবার আমি মেথর হয়ে অপরের ঊপকারের জন্য মন্ত্রী,নেতা,বিচারপতি,অফিসার ইত্যাদি হয়ে অতীতকে ভূলে যাই কিনা, অথবা একে অপরের প্রতি ভাব দেখাই কিনা? আপনি জাতের আর আরেকজন বেজাত,তাই বলে কি আল্লাহ জাতের জন্য কিংবা বেজাতের জন্য আলাদা বেহেস্ত-দোযখ সৃষ্টি করেছেন। আর এই কারণেই আল্লাহ পবিত্র কোরানে বলেছেন, ভাব (আমিত্ব) দেখালেই শাস্তি পাবে। আবার ভেবে দেখুন তো, আমরা যে পানি খাই তা কোথা থেকে পাই। প্রস্রাব,পায়খানা,ময়লাযুক্ত পানি মাটি শোষণ করে নীচের বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে পানযোগ্য করে তুলে অথবা নদী-নালায় মিশে সাগর-মহাসাগরে পতিত হয়ে পানযোগ্য করে তুলে। সুতরাং পান যোগ্য পানির ইতিহাস শুনে কি আপনি পানি পান ছেড়ে দিবেন। তাহলে আপনার মধ্যে জাত-বিজাতের ঘৃণা কেন? আপনি যতবড় মহাজন হউন না কেন,আপনার পরিচয় এক ফোটা অপবিত্র পানি।আর ঐ অপবিত্র পানি পর্যায়ক্রমে এসে আপনার বর্তমান অবস্থা।সুতরাং আপনি আপনাকে পরিপূর্ণভাবে চিনে,জেনে,বুজে বড়ত্বের বড়াই করিবেন,জাত-বিজাতের অহংকার করিবেন না।সুতরাং কোরানের আলোকে তথা দেহতত্ত্ব ও আত্মতত্ত্বে বলা যায় যে,আমিই জাত,আমিই বিজাত হেতু আমি আমাকে ঘৃর্ণা করিতে পারি না। আর এই কারণেই বলা যায়, জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল। আর আল্লাহ কর্মের বিচার করিবেন।
সম্পাদক - মোঃ মনির হোসেন