তৌফিকুর রহমান তাহের
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরহাটিঁ ইউনিয়নের রাজাপুর পয়েন্টে গরুর ঘাস নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মোটর সাইকেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মোঃ রফিক মিয়া(৪০)। তিনি পাইকুরহাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত ইন্নাছ মিয়ার ছেলে। নিহতের তিনটি কন্যা সন্তান ও দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
১৬এপ্রিল(বুধবার) বিকেলে রাজাপুর পয়েন্টে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। কৃষককে হত্যা করে তিনলাখ টাকায় ধামাচাপা দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেক লোকজন সংবাদকর্মীদের জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজাপুর গ্রামের কৃষক রফিক মিয়া গ্রামের হাওর থেকে গরুর জন্য ঘাস কেটে নিয়ে নিজ বাড়ি ফেরার পথে রাজাপুর পয়েন্টে আসামাত্র পার্শবর্তী মধ্যনগর উপজেলার চামারদনি ইউনিয়নের দক্ষিন আমজোড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে মোবারক হোসেন মোটর সাইকেল যোগে মোহনগঞ্জ থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে রাজাপুর পয়েন্টে এই কৃষককে ধাক্কা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
খবর পেয়ে সেলবরস ইউপির চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ খোকা,পাইকুরহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল,রাজাপুর গ্রামের সেনারুল ইসলাম,কামাল মিয়া ও বাদশাগঞ্জ গ্রামের নজরুল মিয়া এই দুই গ্রামের সালিশরা নিহতের বাড়িতে এসে তার পরিবারের হাতে মোটর সাইকেলের চালকের পক্ষ হতে তিনলাখ দিবেন বলে সালিশে রায় ঘোষনা করেন। তবে এখনো নিহতের পরিবারের হাতে সালিশ ব্যাক্তিরা টাকা দেননি তবে আগামী বুধবারে নিহতের পরিবারের সদস্যদের হাতে টাকা দিয়া হবে বলে তিনি জানান। এই গরিব ও নীরিহ কৃষককে হত্যা করে তিনলাখ টাকার বিনিময়ে শেষ কথা বলে বিভিন্ন বাহানা করে পায়তাঁরা চলছে,নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে তারা জানা যায়।
এ ব্যাপারে মোটর সাইকেলের চালক মোবারক হোসেন(মোবাইল-০১৭১৬৯৩৬২৫১) সড়ক র্দূঘটনায় তিনি রফিক মিয়া নামে এক কৃষককে মারার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি প্রথম বলেন তিনি জানেন না।পরবর্তীতে তিনি বলেন যে কৃষক আমার মোটর সাইকেলের ধাক্কায় মারা গেছেন উনি আমার আত্মীয় এটা দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সালিশ ব্যাক্তিরা বসে টাকার বিনিময়ে একটা সমাধান হয়ে গেছে। তাহলে আপনি একজন সাংবাদিক হয়ে মীমাংসিত বিষয়টি নিয়ে কেন নাড়াচড়া করছেন? আমাকে জেল খাটানোর জন্য বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে রাজাপুর গ্রামের সালিশ ব্যাক্তিত্ব সেনারুল মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে(০১৭২৪৫৭১৩২০) যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আমি সালিশে উপস্থিত ছিলাম না। তবে ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরস ইউপির চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ খোকা ও পাইকুরহাটির ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল এই দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে সালিশ ব্যাক্তিরা সালিশে বসে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনা করেই ক্ষতিপূরণ বাবত ৩লাখ টাকা বিচারে রায় করা হয়েছে এবং আগামী বুধবারে নিহতের পরিবারের হাতে টাকা তুলে দেয়া হবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে পাইকুরহাঁটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল(০১৭১৮৯২১৩৯১) এই নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সড়ক র্দূঘটনায় কৃষক নিহতের বিষয়টি স্বীকার করে জানান,সেলবরস ও পাইকুরহাটির দুইজন ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে ময়না তদন্ত ছাড়াই নিহতের লাশটি তাদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্পাদক - মোঃ মনির হোসেন