
নাজমুল হুদা , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের ত্রিশালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও আন্দোলন বাঁধাদানের অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৪ মে) ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে “আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২ (সংশোধনী-২০১৪)” এর ৪/৫ ধারায় এ মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের প্রথম আবর্তনের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান।
মামলা গ্রহণ করে একইদিন সন্ধ্যায় বিচারক মোছা. নাসিমা খাতুন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন:
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকিবুল হাসান রনি (আসামি নং-০১),
সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান লিমন (আসামি নং-০২),
সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব (আসামি নং-০৩),
প্রকল্প পরিচালক জোবায়ের হোসেন (আসামি নং-০৪),
অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল হালিম (আসামি নং-০৫),
সাবেক রেজিস্ট্রার ড. মো. হুমায়ুন কবির (আসামি নং-০৬),
সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম (আসামি নং-১০০),
নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হীরক মুশফিক (আসামি নং-১০১),
নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিম আল মামুন (আসামি নং-১০৩),
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের সাবেক ডিন উজ্জ্বল কুমার প্রধান (আসামি নং-১০৪),
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মাসুদ রানা (আসামি নং-১১০),
এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, সহকারী রেজিস্ট্রার, সেকশন অফিসারসহ আরও অনেকের নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় মোট ১৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের (২০২৪) ৩ আগস্ট সরকার পতনের আন্দোলন দমনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সেখানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেয় তারা।
পরদিন, ৪ আগস্ট “মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের পাশাপাশি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।