মোঃ সাগর স্টাফ রিপোর্টার
২০২৪ সালের ১৭ই জুলাই কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় শিক্ষার্থী ও জনতার ডাকা ‘বৈসাবি বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-কে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, তার পেছনে প্রধান ইন্ধনদাতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাইয়ুম সরকার। এ ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ১২ জন এবং আটক করা হয় ৭ জনকে।
সরকারি ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কাইয়ুম সরকারের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। বিশেষ করে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম, এবং সাইবার অপরাধের মামলা রয়েছে তাঁর নামে। মামলা নং ১৮৬ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন ওয়ারেন্টও রয়েছে। এসব কারণেই তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
তবে তিনি বিদেশে থেকেও থেমে নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে অনলাইন রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় কাইয়ুম সরকার লিখেছেন—
“আওয়ামী লীগের বড় নেতারাও দেশ ছাড়লেও এখান থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, আমিও তাই করছি। একাধিক মামলা থাকলেও আমি অনলাইনে সক্রিয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি বিদেশে থেকেও দেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেন এবং সহিংসতা উসকে দেন— তা হলে সেটি দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, দেশের আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য বড় হুমকি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,বিষয়টি দলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তদন্ত করে দেখা উচিত— তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন কিনা।
এছাড়াও জানা গেছে, লন্ডনসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে আয়োজিত আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে কাইয়ুম সরকার নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও তাকে মিছিল ও সভায় দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, কাইয়ুম সরকার একসময় খিলগাঁও থানা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আতাউর রহমান মুন্না এবং দিলোয়ারা সিকদার নামেও নানা অভিযোগ ঘুরপাক খাচ্ছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাইয়ুম সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সম্পাদক - মোঃ মনির হোসেন