নাজমুল হুদা, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ব্যবসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে হত্যা এবং দেশব্যাপী বিএনপির অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। পরে মিছিলটি বিভিন্ন আবাসিক হল, ভিসি বাংলো, প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে ‘জুলাই ২৪ স্কয়ারে'র সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়—
‘সন্ত্রাসীরা উল্লাস করে, ইন্টেরিম কী করে’,
‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’,
‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’,
‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’,
‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন—রুখে দেবে বাংলার জনতা’,
‘আবু সাইদ, মুগ্ধ—শেষ হয়নি যুদ্ধ।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মিটফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে পাথর দিয়ে থেতলে হত্যা করেছে যুবদলের নেতাকর্মীরা। এরপর তার নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে উল্লাস ও নৃত্য করেছে সন্ত্রাসীরা। এই নির্মম দৃশ্য পুরো দেশকে হতবাক করেছে।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য রিদয় বলেন, “এই খুন, এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আজকে আমাদের প্রতিবাদের দরকার ছিল না—যদি প্রশাসন ব্যবস্থাটা ঠিক রাখতো। তারা যদি আগের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করতো, বিচার করতো, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতো, তাহলে আজকে আমার এই ভাই মারা যেত না। এটা একটা রাষ্ট্রীয় খুন। এর দায় অবশ্যই ইন্টেরিম সরকারকে নিতে হবে।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ রিমন বলেন, “আমরা নজরুলের এই মাটি থেকে বলে দিতে চাই—নজরুলের বিদ্রোহী চেতনাকে ধারণ করে কোনো ধরনের অন্যায়, অত্যাচার, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাস আমরা মেনে নেব না। আমরা সব সময় সোচ্চার ছিলাম, আছি এবং থাকব। বহিষ্কারের নামে এই নাটকবাজি জনগণ মানে না, মানবেও না।”
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাজু শেখ বলেন, “সংগ্রামী ছাত্রজনতা প্রথমে আপনাদের প্রস্তরযুগে স্বাগত জানাচ্ছি। বিএনপির মাধ্যমে প্রাচীনকালের যে প্রস্তরযুগ আবার ফিরে এসেছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই—জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন খাল খনন এবং গাছ লাগানোর জন্য নয়, এই বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস উচ্ছেদের জন্য।”
সম্পাদক - মোঃ মনির হোসেন