মেহেদী হাসান আরফাত, টেকনাফ প্রতিনিধি:
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ইয়াবাসহ পাচারকারীদের গ্রেপ্তার
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী। বিজিবি সব সময়ই সীমান্ত দিয়ে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে থাকে। এর ধারাবাহিকতায়, পূর্ববর্তী একটি সফল মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানের সূত্র ধরে, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) একটি দীর্ঘ গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনার মাধ্যমে আজ ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্যের চালানসহ তিন জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সাফল্য বিজিবির মাদকবিরোধী কঠোর অবস্থানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায় যে, বাংলাদেশের একটি সংঘবদ্ধ চক্র মায়ানমারের কিছু মাদক কারবারির সঙ্গে যোগসাজশে মাছ ধরার আড়ালে নাফ নদী ব্যবহার করে একটি বড় মাদকের চালান পাচারের চেষ্টা করবে। এই গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি, একটি বিশেষ অপারেশন পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, আজ ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ২ বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের নেতৃত্বে নাজিরপাড়া বিওপি এলাকায় কয়েকটি নৌ-টহলের মাধ্যমে নাফ নদীতে একটি সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময়, মিয়ানমারের মুংডু খাল থেকে একটি সন্দেহজনক জেলে নৌকা নাফ নদীর শূন্য রেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী বিজিবির নৌ-টহল নাফ নদীতে তাদের ধাওয়া করলে পাচারকারীরা দ্রুত কেওড়া বাগানের দিকে অগ্রসর হলে বিজিবির চৌকস দলগুলো তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে নৌকাটি তল্লাশি করার পর মাছ ধরার জালের মধ্যে কৌশলে লুকিয়ে রাখা একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটের ভেতর থেকে বিশেষভাবে মোড়কজাত ৩০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। একই সময়ে নৌকায় থাকা ঐ তিনজন জেলেকে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকায় হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা মায়ানমার থেকে আনা মাদকের চালানটি বাংলাদেশের ইমান আলী নামে এক চোরাকারবারীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৩০,০০০ টাকা চুক্তিতে কাজ করছিল। চালানটি হস্তান্তরের আগেই তারা বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। মাদক পাচারের মূল হোতা ইমান আলীকে গ্রেপ্তারে বিজিবির অভিযান চলমান রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত আলামতসহ আসামীদের টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের পরিচয় নিচে প্রদত্ত হলোঃ
ধৃত আসামী
আব্দুল্লাহ (৩০), পিতাঃ নজির আহমেদ।
মোঃ জহির আহমেদ (৫০), পিতাঃ হাবিবুর রহমান।
মোঃ কেফায়েত উল্লাহ (১৮), পিতাঃ নজির আহমেদ।
সকলের ঠিকানা: গ্রাম-উত্তর নাজিরপাড়া, (টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড), ডাকঘর- টেকনাফ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
পলাতক আসামী
ইমাম হোসেন (৩০), পিড়া-গুরা মিয়া, গ্রাম-উত্তর নাজিরপাড়া, (টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড), ডাকঘর- টেকনাফ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের অবৈধ ও অপরাধমূলক কার্যক্রম দমনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত সুরক্ষায় তাদের কঠোর অবস্থান ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।
সম্পাদক - মোঃ মনির হোসেন