
বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আজাদ দুলাল স্থানীয় ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বিপুলের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি এবং পরবর্তীতে প্রকাশ্য প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলেছেন। ঘটনাটি ঘিরে পুরো এলাকায় নিন্দা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
চেয়ারম্যান দুলালের অভিযোগ অনুযায়ী, কিছুদিন আগেই ছাত্রদল নেতা বিপুল তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। তবে কত টাকা দাবি করা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
কিন্তু এরপর গত রবিবার (২৯ জুন) বেলা আনুমানিক ৩টার দিকে, বিপুল সরাসরি তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, “তুই ঘর থেকে বের হতে পারবি না, তোর চেয়ারম্যানগিরি দেখে নেব।”
পরদিন সোমবার (৩০ জুন) সকালে, চেয়ারম্যান দুলাল এককভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি তুলে ধরেন। কোনো প্রেসক্লাবে নয়, ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি নিজের বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি একাই ছিলেন—ইউনিয়নের কোনো ইউপি সদস্য পাশে ছিলেন না।
তিনি বলেন, “আমি একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, জনগণের জন্য কাজ করি। অথচ একজন রাজনৈতিক দলের নেতা আমার ওপর চাঁদার চাপ সৃষ্টি করে এখন আমাকে জানে মারার হুমকি দিচ্ছে। আমি আতঙ্কে আছি, প্রশাসনের কাছে সুরক্ষা চাই।”
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, “গত আগস্ট থেকে বিপুল ও তার দলবল এলাকায় নানা ধরনের চাঁদাবাজি, দখল, ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায় না। এবার একজন চেয়ারম্যান প্রতিবাদ করায় তাকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বিপুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় বড়াইগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সচেতন নাগরিকেরা বলছেন, “যদি একজন জনপ্রতিনিধিকেই হুমকি দিয়ে ঘরবন্দী করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।”