
লেখক
মো. রুকন উদ্দিন
গণমাধ্যমকর্মী
কেন্দুয়া, নেত্রকোণা
মোবাইল নং- ০১৭১৯-৯৫২২১৯
নতুন নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ঘটায় তথ্য প্রযুক্তির যুগে দেশ এখন ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। কৃষি থেকে শুরু করে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে প্রযুক্তি বা আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। দেশের অধিকাংশ মানুষই এখন প্রযুক্তি নির্ভর। দেশের যুব ও তরুণ সমাজ ফ্রিল্যান্সারের কাজ করে মাসে আয় করছে লাখ লাখ টাকা যা দেশের অর্থনীতির একটা বড় অংশ। রিক্সা ওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুর খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে যাদের হাতে স্মার্ট ফোন নেই।
প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে যেমনটা সুফল হচ্ছে তন্মধ্যে কিছুটা কুফল ও হচ্ছে। কোন প্রযুক্তিই খারাপ দিক বিবেচনা করে আবিষ্কার করেননি আবিষ্কারক বরং যারা এটাকে ব্যবহার করেন তারাই তাদের মনোভাব অনুয়ায়ী ব্যবহার করেন।প্রযুক্তিটা এমন পর্যায়ে এসেছে যা মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তির যুগে এমন কিছু কিছু নতুন-পুরাতন গেম খেলার সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে যা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে মানুষের হাতে হাতে, যে কেউ ইচ্ছে করলে খুব সহজেই ইনস্টল করে এটাকে ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় এইসব গেম খেলে অনেক জায়গায় বড় বড় দুর্ঘটনাও ঘটেছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ জনপ্রিয় খেলা হিসেবে জমে উঠেছে স্মার্টফোন দ্বারা বিভিন্ন গেমের মাধ্যমে জুয়া খেলা তার মধ্যে লুডু খেলা অন্যতম, কারণ এই খেলাটির সফটওয়্যার যে কেউ ইচ্ছে করলেই ইনস্টল করতে পারে আর খেলতেও খুব সহজ। যেটি এখন গ্রামীণ জুয়া খেলায় পরিণত। এতে করে দিনদিন ধ্বংসের পথে স্মার্টফোনে আসক্ত হওয়া আধুনিক প্রজন্ম। এছাড়াও চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে চায়ের দোকানগুলোতে চলছে জুয়ার আসর। সারা বছরই ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলা চলে টিভির পর্দায় এমনকি স্মার্ট মোবাইলেও সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেখা যায়। এক শ্রেণীর মানুষের পেশাই হচ্ছে এই গেম খেলা গুলোর মাধ্যমে জুয়া খেলা। বিশেষ করে ছাত্র, তরুণ-যুব ও বেকারসমাজ।
একসময়ে যে লুডু খেলার বোর্ড ছিল কাগজের তৈরি, বর্তমানে সেই খেলাটি স্মার্ট ফোনে সফটওয়্যারের মাধ্যমে খুব সহজেই পাওয়া যায়। আর সেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে দিনে কিংবা গভীর রাত পর্যন্ত দোকানে, নির্জনস্থানে, রাস্তাঘাটে চলছে লুডুর মাধ্যমে জুয়া খেলা। যেন দেখার কেউ নেই।
বিভিন্ন কাজে দেশের যেখানেই যাওয়া হয় সেখানেই লুডুর মাধ্যমে জুয়া খেলার চিত্র চোখে পড়ে। তন্মধ্যে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মাইক্রো, সিএনজি, অটোরিক্সা স্ট্যান্ড এলাকা, সেনের বাজার মোড়, দূর্গাপুর মোড়, সেনের বাজার, ভরাপাড়া, বালিজুড়া, রামপুর, আমলীতলা, নওপাড়া, গোগ, সাজিউড়া, চিরাং, পাইকুড়া, মাসকা, রোয়াইলবাড়ী, সাহিতপুর, সান্দিকোনা, মডেল বাজার ও জনতা বাজারের চায়ের দোকান গুলোসহ আরো অন্যান্য এলাকায় কিশোর, যুবক, শিক্ষার্থীসহ ভিন্ন বয়সের মানুষ গ্রাম গঞ্জের অলি-গলি, কিংবা রাস্তার পাশে বা নির্জনস্থানে বসে লুডু খেলার মাধ্যমে জুয়া খেলায় আসক্ত হচ্ছে।
স্মার্টফোনে সফটওয়্যার ইনস্টল করে চারজন বা দুজন মিলে এ খেলাটি খেলা যায়। মোবাইলেই এ খেলার প্রবণতা বেশি চোখে পড়ে।
গেমটি শেষ হতে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগে। প্রতি গেমে বাজি থাকে হয় বহু টাকা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ বেশিও হয়। বেশিরভাগই খেলাটি চায়ের দোকান বা নির্জনস্থানে এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের রাস্তাঘাটে খেলতে চোখে পড়ে এ জুয়া খেলাটি। যারা লুডুর মাধ্যমে জুয়া খেলে, তারা একত্রিত হয়ে একটি মোবাইলের মাধ্যমে খেলাটি খেলতে বসে।
পরিশেষে মত প্রকাশ করছি- এসব খেলায় আসক্ত হয়ে যখন জুয়াড়িরা সর্বস্ব হারিয়ে ফেলে, তখন তারা নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। আবার কোন কোন সময় দেখা যায়, এর প্রভাবে অনেকের পরিবারে বা একে অন্যের সাথে নানা ধরনের কলহ বিবাদের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকার মাধ্যমে জানা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশের এখনো বড় সমস্যা বেকার সমস্যা, যথাযথ স্থায়ী কর্মসংস্থান না থাকার কারণে অলস সময়ে তারা জুয়া খেলাকে বেঁচে নেয়। তাই আমি মনে করি দেশের বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে হয়তোবা কিছুটা সুফল পাওয়া যাবে। তাই এই খেলা বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা বলে আমি মনে করি।উর্ধতন কতৃপক্ষ যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তাহলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জুয়া খেলা থেকে প্রতিকার পাবে নতুন প্রজন্ম।