ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
বিএনপি নেতাকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জে বিজিবি’র অভিযানে মালিক বিহীন ৯টি ভারতীয় অবৈধ গরু আটক ভোলাহাট উপজেলায় উপস্থাপিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’র প্রচারণা ও কর্মশালা পরিচালনা তারেক রহমানের দেশে আসতে কোনো বাধা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ফুলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত,পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন ছাতকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কিশোরীকে গণধর্ষন,গ্রেফতার১ ভালুকায় মাদকাসক্ত যুবককে উদ্ধার করলো, ফায়ার সার্ভিস মায়ের জানাযারে অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তি, সাংবাদিক রূপা-শাকিল মদনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিনটি মামলা ও জরিমানা। নাটোরের সিংড়ায় উদ্ধারকৃত গোলাকাটা সেই নারীর পরিচয় সনাক্ত, গ্রেফতার ৪জন

প্রকল্প কাজে নয় ছয়, পিআইও অফিসের অফিস সহকারীর যোগসাজসে বরাদ্দের টাকা আত্মসাত

শফিউল আলম রানা, মদন প্রতিনিধি

 

নেত্রকোনার মদনে কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয় ছয় করে পিআইও অফিসের অফিস সহকারি রাসেলের যোগসাজসে প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠেছে। এই নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। শুরু হয়েছে সুশীল সমাজের মধ্যে কানাঘুষা। বিরাজ করছে উত্তেজনা। জনসাধারণের প্রশ্ন কিভাবে একই ব্যক্তি এক অর্থবছরে তিনটি প্রকল্পের সভাপতি হয়? স্থানীয় বলছেন উদ্দেশ্য ছিল প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ করা। তবে প্রকল্প সভাপতির দাবি তিনি বাড়িতে থাকেন না। অন্য লোক দিয়ে কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছেন।

 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় পর্যায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা তিয়শ্রী ইউনিয়নের একই জায়গায় ধুবাওয়ালা সিসি রাস্তা হতে হাওরে ইসলাম উদ্দিনের জমি, ছোটন মিয়া জমি হইতে সাইফুল ইসলামের জমি ও হান্নানের জমি হইতে কালামের জমি পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প দেওয়া হয়। এ তিনটি প্রকল্পে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের সভাপতি আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি কে করা হয়।

 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একই রাস্তায় ঘুরেফিরে তিনটি প্রকল্প করা হয়। এই তিন প্রকল্পে নয় লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে রাস্তা সংস্কার কাজ নামমাত্র মাটি কাটা হয়। তবে স্থানীয় লোকজন তিনটি প্রকল্পের ৯ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না ।

 

স্থানীয় শাহ আলম, পল্টন মিঠু তানজিল সহ অনেকেই বলেন, এই রাস্তায় ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে তা আমরা এলাকাবাসী জানিনা। সব মিলাইয়া এক্সভেটর দিয়ে ৩০ ঘণ্টার মতো কাজ করা হয়েছে। যা গড়ে ৫০-৬০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। এতো চুরি নয় যেন ডাকাতি হয়েছে। প্রকল্প কাজে যে বা যারা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে আমরা তাদের উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

 

তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন শামীম বলেন, এই রাস্তা সংস্কার বাবদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ! এলাকাবাসী কেউই জানেনা। তিনটি প্রকল্প একটা রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। কিছু মাটি ফেলেছে আমরা এলাকাবাসী দেখেছি।

 

তিনি আরও বলেন, রাস্তা একটা, জায়গাও অল্প, এর মধ্যেই ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ। এ যেন মগের মুল্লুক।

 

প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নেত্রকোনায় থাকেন তিনি। অন্য লোক দিয়ে প্রকল্পের কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছে।

 

মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের বরাদ্দের সময় তিনি ছিলেন না। বিষয়টা তার অফিসের অফিস সহকারী রাসেল ভাল জানেন।

 

প্রকল্প কাজে তার যোগসাজসে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্যালয়ের অফিস সহকারি রাসেল জানান, আমি অফিসের সামান্য একজন কর্মচারী। বিল দেওয়ার ক্ষমতা বা সাইন করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি এ বিষয়ে কিভাবে জানব?

 

এ ব্যাপারে মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনার জিন্নাত জানান, এই প্রকল্পের কাজের সময় আমি ছিলাম না। আমার আগের ইউএনও বিষয়টা ভালো জানেন।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি নেতাকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে

প্রকল্প কাজে নয় ছয়, পিআইও অফিসের অফিস সহকারীর যোগসাজসে বরাদ্দের টাকা আত্মসাত

আপডেট টাইমঃ ০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

শফিউল আলম রানা, মদন প্রতিনিধি

 

নেত্রকোনার মদনে কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয় ছয় করে পিআইও অফিসের অফিস সহকারি রাসেলের যোগসাজসে প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠেছে। এই নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। শুরু হয়েছে সুশীল সমাজের মধ্যে কানাঘুষা। বিরাজ করছে উত্তেজনা। জনসাধারণের প্রশ্ন কিভাবে একই ব্যক্তি এক অর্থবছরে তিনটি প্রকল্পের সভাপতি হয়? স্থানীয় বলছেন উদ্দেশ্য ছিল প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ করা। তবে প্রকল্প সভাপতির দাবি তিনি বাড়িতে থাকেন না। অন্য লোক দিয়ে কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছেন।

 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় পর্যায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা তিয়শ্রী ইউনিয়নের একই জায়গায় ধুবাওয়ালা সিসি রাস্তা হতে হাওরে ইসলাম উদ্দিনের জমি, ছোটন মিয়া জমি হইতে সাইফুল ইসলামের জমি ও হান্নানের জমি হইতে কালামের জমি পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প দেওয়া হয়। এ তিনটি প্রকল্পে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের সভাপতি আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি কে করা হয়।

 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একই রাস্তায় ঘুরেফিরে তিনটি প্রকল্প করা হয়। এই তিন প্রকল্পে নয় লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে রাস্তা সংস্কার কাজ নামমাত্র মাটি কাটা হয়। তবে স্থানীয় লোকজন তিনটি প্রকল্পের ৯ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না ।

 

স্থানীয় শাহ আলম, পল্টন মিঠু তানজিল সহ অনেকেই বলেন, এই রাস্তায় ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে তা আমরা এলাকাবাসী জানিনা। সব মিলাইয়া এক্সভেটর দিয়ে ৩০ ঘণ্টার মতো কাজ করা হয়েছে। যা গড়ে ৫০-৬০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। এতো চুরি নয় যেন ডাকাতি হয়েছে। প্রকল্প কাজে যে বা যারা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে আমরা তাদের উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

 

তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন শামীম বলেন, এই রাস্তা সংস্কার বাবদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ! এলাকাবাসী কেউই জানেনা। তিনটি প্রকল্প একটা রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। কিছু মাটি ফেলেছে আমরা এলাকাবাসী দেখেছি।

 

তিনি আরও বলেন, রাস্তা একটা, জায়গাও অল্প, এর মধ্যেই ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ। এ যেন মগের মুল্লুক।

 

প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নেত্রকোনায় থাকেন তিনি। অন্য লোক দিয়ে প্রকল্পের কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছে।

 

মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের বরাদ্দের সময় তিনি ছিলেন না। বিষয়টা তার অফিসের অফিস সহকারী রাসেল ভাল জানেন।

 

প্রকল্প কাজে তার যোগসাজসে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্যালয়ের অফিস সহকারি রাসেল জানান, আমি অফিসের সামান্য একজন কর্মচারী। বিল দেওয়ার ক্ষমতা বা সাইন করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি এ বিষয়ে কিভাবে জানব?

 

এ ব্যাপারে মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনার জিন্নাত জানান, এই প্রকল্পের কাজের সময় আমি ছিলাম না। আমার আগের ইউএনও বিষয়টা ভালো জানেন।