ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
নাটোরের লালপুরে মোল্লাপাড়া চরে সেনা অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ কাকনের ভায়রা গ্রেফতার বিশম্ভরপুরে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় বড় ভাইয়ের ছোটভাই খুন নেত্রকোনা, আটপাড়ায় বিষ্ণুপুর গ্রামে দেবর ভাবিকে কুড়াল, দিয়ে মাথ্যায় আঘাত গোমস্তাপুরে জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আটপাড়ায় উপর্যোপরি চুরিকাঘাতে এক বৃদ্ধ গুরুতর জখম পূর্বধলায় ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালিত দেশব্যাপী ষড়যন্ত্র ও প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে গফরগাঁওয়ে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কলমাকান্দায় ২০ হাজার আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস চারা ধ্বংস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদদের স্মরণে জুলাই শহীদ ও শোক দিবস পালিত শোক সংবাদ

দোকানের কোণায় দাঁড়িয়ে আর্তনাদ—এক জনপ্রতিনিধির কাছে নিঃস্ব এক নারীর জীবনের গল্প”

 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

 

 

নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন কালুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বাজারের একটি দোকানের ভেতরে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন তারই স্ত্রী মরিয়ম খাতুন। চারদিকে হাটের কোলাহল, আর মাঝখানে একজন নিঃসঙ্গ নারী—যার কণ্ঠে ছিল না চিৎকার, ছিল শুধু গভীর, মায়াভরা এক আর্তনাদ।

 

মরিয়ম বলেন, “আমি শুধু একজন স্ত্রী ছিলাম না—আমি ছিলাম একজন মানুষের জীবনের অংশ। অথচ সেই মানুষটাই আমাকে ভাঙলো, তুচ্ছ করলো, ধ্বংস করলো। বছরের পর বছর ধরে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে গেছে।”

 

তিনি জানান, ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন কালু সমাজে একজন সম্মানিত জনপ্রতিনিধি হলেও ঘরের ভেতরে তার রূপ ভিন্ন। “মানুষ তাকে ভোট দিয়েছে, বিশ্বাস করেছে। অথচ সেই মানুষটাই দিনের পর দিন একজন নারীকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।”

 

মরিয়ম বলেন, তিনি অতীতেও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন, কিন্তু নানা অজুহাত, প্রতিশ্রুতি ও সামাজিক চাপে পড়ে সেসব মামলা তুলে নিতে হয়েছিল তাকে। “আমি চেয়েছিলাম সংসারটা টিকুক। কিন্তু আমার সহ্য করাটাই তার পাষণ্ডতার পাথরে আরও ইট জুড়েছে।”

 

তবে এবার আর পিছু হটেননি তিনি। মরিয়ম খাতুন আবারও আদালতে মামলা করেছেন।

তিনি বলেন, “এবার আমি শেষ পর্যন্ত যাব। বিচার আদায় না করে থামবো না। কারণ এবার আমি শুধু নিজের জন্য নয়—সকল নির্যাতিত নারীর জন্য লড়ছি।”

 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইমরান হোসেন কালু একাধিক বিয়ে করেছেন এবং প্রতিটি সম্পর্কে নারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম কোনও নারীর বিরুদ্ধে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি—তার সব কথা ছিল শুধুমাত্র নির্যাতনের দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

 

“আজ আমার পাশে কেউ নেই। বাজারের একটা দোকানের কোণায় দাঁড়িয়ে নিজের জন্য লড়ছি। কারণ আমি জানি, যদি আজ আমি চুপ থাকি, কাল অন্য একজনও কাঁদবে আমার মতো। আমি বিচার চাই। আমি নিরাপত্তা চাই,” বলেন মরিয়ম।

 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের কাছে তার এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান। সেইসঙ্গে একজন জনপ্রতিনিধির হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া এক নারীর পক্ষ থেকে ইমরান হোসেন কালুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

 

এই প্রতিবেদন শুধু একটি অভিযোগ নয়—এ যেন এক ভাঙা হৃদয়ের অভিমানে উচ্চারিত সমাজের প্রতি প্রশ্ন:

“কতদিন আর নারীর কান্না চাপা পড়ে থাকবে দেওয়ালের আড়ালে?”

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোরের লালপুরে মোল্লাপাড়া চরে সেনা অভিযানে অস্ত্র ও মাদকসহ কাকনের ভায়রা গ্রেফতার

দোকানের কোণায় দাঁড়িয়ে আর্তনাদ—এক জনপ্রতিনিধির কাছে নিঃস্ব এক নারীর জীবনের গল্প”

আপডেট টাইমঃ ০৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

 

 

নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন কালুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বাজারের একটি দোকানের ভেতরে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন তারই স্ত্রী মরিয়ম খাতুন। চারদিকে হাটের কোলাহল, আর মাঝখানে একজন নিঃসঙ্গ নারী—যার কণ্ঠে ছিল না চিৎকার, ছিল শুধু গভীর, মায়াভরা এক আর্তনাদ।

 

মরিয়ম বলেন, “আমি শুধু একজন স্ত্রী ছিলাম না—আমি ছিলাম একজন মানুষের জীবনের অংশ। অথচ সেই মানুষটাই আমাকে ভাঙলো, তুচ্ছ করলো, ধ্বংস করলো। বছরের পর বছর ধরে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে গেছে।”

 

তিনি জানান, ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন কালু সমাজে একজন সম্মানিত জনপ্রতিনিধি হলেও ঘরের ভেতরে তার রূপ ভিন্ন। “মানুষ তাকে ভোট দিয়েছে, বিশ্বাস করেছে। অথচ সেই মানুষটাই দিনের পর দিন একজন নারীকে নিঃশেষ করে দিয়েছে।”

 

মরিয়ম বলেন, তিনি অতীতেও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন, কিন্তু নানা অজুহাত, প্রতিশ্রুতি ও সামাজিক চাপে পড়ে সেসব মামলা তুলে নিতে হয়েছিল তাকে। “আমি চেয়েছিলাম সংসারটা টিকুক। কিন্তু আমার সহ্য করাটাই তার পাষণ্ডতার পাথরে আরও ইট জুড়েছে।”

 

তবে এবার আর পিছু হটেননি তিনি। মরিয়ম খাতুন আবারও আদালতে মামলা করেছেন।

তিনি বলেন, “এবার আমি শেষ পর্যন্ত যাব। বিচার আদায় না করে থামবো না। কারণ এবার আমি শুধু নিজের জন্য নয়—সকল নির্যাতিত নারীর জন্য লড়ছি।”

 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইমরান হোসেন কালু একাধিক বিয়ে করেছেন এবং প্রতিটি সম্পর্কে নারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম কোনও নারীর বিরুদ্ধে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি—তার সব কথা ছিল শুধুমাত্র নির্যাতনের দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

 

“আজ আমার পাশে কেউ নেই। বাজারের একটা দোকানের কোণায় দাঁড়িয়ে নিজের জন্য লড়ছি। কারণ আমি জানি, যদি আজ আমি চুপ থাকি, কাল অন্য একজনও কাঁদবে আমার মতো। আমি বিচার চাই। আমি নিরাপত্তা চাই,” বলেন মরিয়ম।

 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের কাছে তার এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান। সেইসঙ্গে একজন জনপ্রতিনিধির হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া এক নারীর পক্ষ থেকে ইমরান হোসেন কালুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

 

এই প্রতিবেদন শুধু একটি অভিযোগ নয়—এ যেন এক ভাঙা হৃদয়ের অভিমানে উচ্চারিত সমাজের প্রতি প্রশ্ন:

“কতদিন আর নারীর কান্না চাপা পড়ে থাকবে দেওয়ালের আড়ালে?”