
আটপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি
নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্র নাজিরগঞ্জ বাজার বর্তমানে অবৈধ জুয়ার আসরের কারণে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে। প্রতিদিন রাতের আঁধারে বাজারের বিভিন্ন স্থানে জুয়ার আসর বসে, যেখানে অসংখ্য মানুষ বিশেষ করে যুবক ও মধ্যবয়সী মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। এতে একদিকে সমাজে অশান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে অসংখ্য পরিবার অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ,
দীর্ঘদিন ধরেই নাজিরগঞ্জ বাজারে এ ধরনের জুয়ার আসর চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়া খেলার মহড়া। এতে শিক্ষার্থীরা ও তরুণ প্রজন্ম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা সহজেই অর্থলোভে পড়ে পড়াশোনা ছেড়ে জুয়ার আসরে সময় কাটাচ্ছে। অনেক পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জুয়ায় আসক্তির কারণে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ,
এলাকার সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছেন, অবৈধ জুয়ার আসর বন্ধে প্রশাসন কার্যত নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। মাঝে মাঝে প্রতীকী অভিযান চালানো হলেও তা শুধুমাত্র লোক দেখানো। আসলপক্ষে জুয়ার মূল হোতারা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয়রা মনে করেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এই জুয়ার আসর টিকে আছে।
সামাজিক ক্ষতি,
অবৈধ জুয়ার কারণে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, পারিবারিক কলহ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক তরুণ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে, আবার কেউ কেউ সর্বস্ব হারিয়ে হতাশায় আত্মঘাতী প্রবণতায় ভুগছে। নারীরা তাদের সংসার টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমনকি বাজারের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কারণ জুয়ার কারণে বাজারে সঠিক বাণিজ্যিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের দাবি
এলাকার সৎ ও সচেতন মানুষরা জোরালোভাবে দাবি তুলেছেন—
1. নাজিরগঞ্জ বাজারে অবৈধ জুয়ার আসর দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
2. এর সঙ্গে জড়িত হোতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
3. প্রশাসনের নিরবতা ভেঙে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
4. তরুণদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক উদ্যোগ ও সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করতে হবে।
পরিশেষে, আটপাড়া উপজেলার নাজিরগঞ্জ বাজারের অবৈধ জুয়ার আসর এখন একটি সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে সমাজে অশান্তি বাড়তে থাকবে এবং তরুণ প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে। তাই প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে এ অপকর্ম বন্ধ করতে হবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ।