
তৌফিকুর রহমান তাহের, সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
(সুনামগঞ্জের) দিরাই পৌরসভার ভরারগাঁও গোফরাঘাট জলমহালে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জোরপূর্বক মাছ লুটের ঘটনায় বৃহস্পতিবার পুলিশ ৮জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও কচুয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশর দাস খোকা সূত্রে জানা যায় গত ৫মার্চ সকালে দিরাই পৌরসভার আশপাশের প্রায় দুই হাজার মানুষজন একতাবদ্ধ হয়ে ভরারগাঁও গোফরাঘাট জলমহালে অবৈধভাবে প্রবেশ করে জোরপূর্বক প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় জলমহালের ইজারাদার ও কচুয়া সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস খোকা দিরাই থানায় দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৪৪৭/৩৭৯/৩৪ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এজাহারনামীয় ২২জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করে হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, কচুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ১৪২৮-১৪৩৩ বাংলা পর্যন্ত সরকারি নিয়ম নীতি মেনে উক্ত জলমহালের ইজারা গ্রহণ করে এবং নিয়মিত খাজনা, ভ্যাট পরিশোধ করে মাছ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা চালিয়ে আসছিলেন। গত দুই বছর ধরে জলমহালটিকে মাছের অভয়াারণ্য হিসেবে রাখা হয়েছিল।
কিন্তু বুধবার সকালে দিরাই থানার কল্যাণী গ্রামের জীবন রায় (৪৫), একই থানার চন্দ্রপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া (৩২) ও হুমায়ূন (২০),বাউসী গ্রামের বাধন বৈষ্ণব (২২),সমিরন বৈষ্ণব (১৯), মৃদুল বৈষ্ণব (১৯), ভাঙ্গাডহর গ্রামের পিন্টু তালুকদার (৩২),মৃদুল দাস (২৮), স্বরমঙ্গল গ্রামের আব্দুল তাহিদ (৪০), একই গ্রামের রমজান (৪০),রায়হান (৩৮), দবির মিয়া (৩৫), ছালিক মিয়া(৩৮), সম্রাট মিয়া (৫৫), সাজিদ মিয়া (২৭),হামিদ মিয়া (৪০),জিয়াবুর (৪০), ফরদি মিয়া (৪৫), নাহিদ (২৭), মোহন মিয়া (৪০), কায়েছ মিয়া এবং ঘাগটিয়া গ্রামের রজত মিয়া (৩৫) এই ২২জনের নাম উল্লেখ করে আরো দুই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তি জলমহালে প্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ ধরতে শুরু করেন। জলমহালে থাকা আইড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, কার্পু, গ্রাস কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় কোটি টাকার মাছ অবৈধভাবে ধরে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ দ্রত ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে জীবন রায়, ২। এরশাদ মিয়া, হুমায়ূন, বাধঁন বৈষ্ণব,সমরিন বৈষ্ণব, মৃদুল বৈষ্ণব,পিন্টু তালুকদার ও মৃদুল দাসকে আটক করা হয়। এ সময় পুলিশ আটককৃতদের কাছ থেকে মাছ ধরার সরঞ্জাম থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম এবং উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসার দ্রæত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিনে জলমহালটি পরিদর্শন করেন।
জেলার অন্যান্য বিল থেকে যারা অবৈধভাবে মাছ আহরণের চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এব্যাপারে দিরাই থানার ওসি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ৮জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।