
নিজস্ব প্রতিবেদক সাহাবুল আলম
“মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই শুধু পুলিশের নয়, এটা আমাদের সবার যুদ্ধ। এই সমাজটা আপনার-আমার। যদি কোনো পুলিশ সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না — শুধু তথ্য দিন, ব্যবস্থা নেব আমরা।”
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ারের এমন খোলামেলা ও সাহসী বক্তব্যে মুগ্ধ হয়েছেন উপস্থিত সবাই। মঙ্গলবার নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ৩ নম্বর জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের হলরুম (ঠিকানা: জোনাইল বাজার সংলগ্ন, বড়াইগ্রাম, নাটোর)-এ অনুষ্ঠিত “ওপেন হাউজ-ডে” অনুষ্ঠানে এমন আন্তরিক আহ্বান জানান তিনি।
রাজশাহী রেঞ্জের অধীনে বড়াইগ্রাম থানা আয়োজিত এই ওপেন হাউজ-ডেতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, জামাত-শিবির, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সাধারণ এলাকাবাসী। আলোচনায় প্রধান বিষয় ছিল—মাদকের ভয়াবহ বিস্তার এবং তার প্রতিকার।
ওসি গোলাম সারোয়ার বলেন, “আমরা চাই মাদকমুক্ত বড়াইগ্রাম। কিন্তু তা কেবল পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। জনগণ তথ্য দিলে আমরা সেই ভিত্তিতে অভিযান চালাবো। প্রয়োজন হলে মাইকিং করে আগে সতর্ক করবো, এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেব। যেখানে মাদক বেশি, সেখানে আলাদা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার নিয়োগ করবো।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই আমার থানার কেউ যদি মাদক সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধে জড়িত থাকে, সেটাও আপনারা জানাবেন। আমি নিজে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। প্রশাসনের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও, তা প্রমাণ হলে ছাড় দেওয়া হবে না।”
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ৩ নম্বর জোনাইল ইউনিয়নে মাদকের প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি। অভিযোগ রয়েছে—মাদক ব্যবসায়ী অনেকেই এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু ওসি গোলাম সারোয়ারের এমন সাহসী ও মানবিক বক্তব্যে এলাকাবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বলেন, দলমত নির্বিশেষে মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাধারণ এলাকাবাসীও স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাদকবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে একাট্টা হন।
ওপেন হাউজ-ডের এই উন্মুক্ত আলোচনা এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বড়াইগ্রামে—যেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে আসছে সাহায্যের হাত, আর জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি সহযোগিতার।