ঢাকা , রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
চোরাকারবারী কে ধরতে গিয়ে ভারতে ঢুকে পড়া বিজিবি সদস্যেকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ  উদ্দীপন রহনপুর শাখার আওতায় কৈশোর কর্মসূচি উপজেলা পর্যায়ে উন্নয়ন মেলা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের শহীদ মিণারে বিজিবির অভিযানে ১০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য আটক দিরাইয়ে সরমঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত  বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) দায়িত্ব পালনের পথে প্রাণ গেল মমিনের — বাঁচার লড়াইয়ে ম্যানেজার শরিফুল অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের যৌথ অভিযান গুরুদাসপুরে বন্ধ হলো ভেকু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ভোলাহাটে রাস্তার বেহাল অবস্থা ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ সেনাবাহিনীর সাহসী অভিযানে গুরুদাসপুরে সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের ছক ভেস্তে গেল ডাকাতির আগেই গ্রেপ্তার ৬ জন, উদ্ধার খেলনা পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র নাটোরে সড়কে নিথর চার জীবন: একটি সন্ধ্যা বদলে দিল চারটি পরিবার

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন…

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

চোরাকারবারী কে ধরতে গিয়ে ভারতে ঢুকে পড়া বিজিবি সদস্যেকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ 

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন…

আপডেট টাইমঃ ০২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।