ঢাকা , শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেত্রকোনা-৩ মনোনীত প্রার্থীর কেন্দুয়া আলেম উলামাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত  ——- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর মানুষের পাশে দাঁড়ানোই মগড়া বাঁধন সংগঠনের কাজ আটপাড়ায় নাজিরগঞ্জ বাজারে অবৈধ জুয়ার আসর নেত্রকোনার কলমাকান্দায় আনন্দপুরকে মডেল ইউনিয়নে উন্নীতকরণের দাবিতে মানববন্ধন দেশে যত বড় চাঁদাবাজই থাকুক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। স্বারাষ্ট্র উপদেষ্টা পানছড়ি সীমান্তে ভারতীয় সালসা জব্দ নেত্রকোণা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ জুন-২০২৫ কার্যক্রমের ১ম দিনের কার্যক্রম সম্পন্ন মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও সহায়তা প্রদান সিধলী বাজারে বাপ্পি কবির ও যুবদল নেতার নেতৃত্বে ২৫-২৭ জনের সশস্ত্র হামলা

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেত্রকোনা-৩ মনোনীত প্রার্থীর কেন্দুয়া আলেম উলামাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত  ——-

চলনবিলের পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

আপডেট টাইমঃ ০৬:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

 

রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান সুমি পারভীন

 

চলনবিল—বাংলার এক প্রাকৃতিক জলাভূমি, যার বুক চিরে বছরের পর বছর ধরে চাষ হয় সোনালী ধান। কিন্তু এ বছর বিলের নরম কাদা আর সোনার ফসল একসঙ্গে গিলে নিয়েছে নতুন করে আসা বন্যার পানি। পানির নিচে চাপা পড়ে গেছে একেকটা কৃষকের হাজারো স্বপ্ন, যাদের অনেকের নাম জানি না, মুখটাও হয়তো আর মনে থাকবে না—তবু তাদের কান্না গেঁথে আছে চলনবিলের প্রতিটি ঢেউয়ে।

একটি নৌকা, তাতে বসে আছেন একজন মাঝবয়সী কৃষক। তার সামনে পানির নিচে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ধানখেত। প্রশ্ন করতেই চোখে জল আটকে রাখা মানুষটা শুধু বললেন,
“সব শেষ… এই বিলই ছিল বাঁচার ভরসা। এখন কিচ্ছু নাই।”
তিনি তার নাম বললেন না। হয়তো লজ্জা, কিংবা ক্লান্তি—কিংবা জানেন, নাম জানলেই বা কী হবে? কে রাখবে তার খবর?

গুরুদাসপুর, সিংড়া আর বড়াইগ্রামের বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের একই চিত্র—ধানের গাছ পানির নিচে, চারদিকে নীরবতা, আর মাঝে মাঝে শুনতে পাওয়া যায় অসহায় দীর্ঘশ্বাস। কৃষকের মুখে নেই আগের মতো আশাবাদ, শুধু একটাই কথা—”ঋণ কে শোধ দিব? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াব?”

চলনবিলের হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কৃষক পরিবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে কয়েকশ একর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি টাকারও বেশি।

সরকারি সহায়তা? স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, তালিকা হচ্ছে। কিন্তু তাতে নাম উঠবে কি না, তাও জানেন না তারা।

একজন প্রবীণ চাষি বললেন,
“বছর বছর এমন হয় না, কিন্তু এবার যা হইছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন… খুব কঠিন।”

এই কৃষকরা নাম চান না, ছবি তোলাও চান না। শুধু চান, কেউ যেন বুঝে নেয় তাদের মনের কথা। কারণ এই কষ্টের তো কোনো খবর রাখে না কেউ।