
সেনাবাহিনীর সাহসী অভিযানে গুরুদাসপুরে সংঘবদ্ধ
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রতিনিধি
রাত তখন ১২টা ১৫ মিনিট। প্রকৃতি নিস্তব্ধ, মানুষ ঘুমিয়ে। কিন্তু অন্ধকারে কিছু মানুষ সাজাচ্ছিল ভয়ংকর এক পরিকল্পনা— ডাকাতি। ঠিক সেই মুহূর্তে দৃশ্যপটে হাজির হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট এলাকায় নিরাপত্তা চেকপোস্টে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করা চারজনকে আটক করেন সেনা সদস্যরা।তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় একটি খেলনা পিস্তল ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র। শুরু হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ, আর সেখানেই ফাঁস হয় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ভয়াবহ কর্মকাণ্ডের কাহিনি। তারা জানায়, দুইজন লিডারের নেতৃত্বে তারা বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত।সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক আরেকটি অভিযান চালিয়ে দলের সেই দুই হোতাসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে—৮টি অটোরিকশা১২টি মোটরসাইকেল৯টি কোরবানির গরু ডাকাতি করেছে।চাঁদা না পেয়ে ৬টি মাছের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মেরে ফেলেছে।এছাড়াও নির্জন জায়গায় সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করত বলেও জানায় তারা।এই দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিল, কিন্তু গোপনে তারা এমন অপরাধে জড়িত থাকবে— তা ভাবেননি কেউই।গ্রেফতারকৃত ডাকাত সদস্যদের নাম ও ঠিকানা:১। মোঃ আব্দুর রাজ্জাক (৩৮)পিতা: মোঃ সিরাজুল হকগ্রাম: নাজিরপুর নতুন পাড়া, ডাকঘর: নাজিরপুর হাট, থানা: গুরুদাসপুর, জেলা: নাটোর২। মোঃ কাওসার আহমেদ (২৫)পিতা: মৃত কামাল হোসেনগ্রাম: নাজিরপুর নতুন পাড়া, ডাকঘর: নাজিরপুর হাট, থানা: গুরুদাসপুর, জেলা: নাটোর৩। মোঃ বিপ্লব মিয়া (২৪)পিতা: আব্দুল আজিজগ্রাম: নাজিরপুর নতুন পাড়া, ডাকঘর: নাজিরপুর হাট, থানা: গুরুদাসপুর, জেলা: নাটোর৪। মোঃ মনিরুল ইসলাম (২৪)পিতা: মোঃ রওশন মিয়াগ্রাম: হরদমা, থানা: গুরুদাসপুর, জেলা: নাটোর৫। মোঃ মবিদুল ইসলাম (২১)পিতা: মোঃ মোবারকগ্রাম: নাজিরপুর দুধগাড়ি, ডাকঘর: নাজিরপুর হাট, থানা: গুরুদাসপুর, জেলা: নাটোর৬। মোঃ সুরুজ আলী (২১)পিতা: মোঃ সালাম আলীগ্রাম: কালিনগর, ডাকঘর: বিলদহর, থানা: সিংড়া, জেলা: নাটোরপ্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সেনাবাহিনী তাদের থানায় হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় গুরুদাসপুরবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।সাধারণ মানুষ বলছে, “সেনাবাহিনী না থাকলে হয়তো আজ রাতটা কালো ইতিহাস হয়ে থাকত!”বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুধু সীমান্তে নয়, দেশের অভ্যন্তরেও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এমন সফল অভিযান আরও একবার প্রমাণ করে— অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।